1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলো আঁধারিতে বেবী হালদার

দেবারতি গুহ২৩ অক্টোবর ২০০৮

'আলো-আঁধারি' বেবী হালদারের প্রথম উপন্যাস৷ তাঁর নিজের জীবনের আলো ও আঁধারের গল্প৷ অথচ, এই প্রথম উপন্যাসই বেবীকে দেশে-বিদেশে মর্যাদা দিয়েছে৷ মর্যাদা দিয়েছে একজন নারীর, একজন লেখকের, একজন প্রান্তিক মানুষের৷

https://p.dw.com/p/FfZf
তসলিমা নাসরিনের 'আমার মেয়েবেলা' উত্‌সাহ যুগিয়েছে বেবী হালদারকে ...ছবি: dpa

বেবী হালদার স্ত্রীর পত্র পড়েন নি, ইবসেনের ডলস হাউসের কথা শোনেন নি, অথচ 'একাই ছেলে মানুষ করতে পারি কিনা' দেখার জন্য পথে নামেন তিনি৷ স্বামীর ঘর ত্যাগ করে চলে আসেন দিল্লিতে৷ ভারতের প্রখ্যাত কথাশিল্পী প্রেমচাঁদের নাতি প্রবোধকুমার বাড়ীতে 'কাজের মেয়ে' হয়ে যোগ দিয়ে, এক সময় হয়ে ওঠেন সে ঘরেরই মেয়ে৷

তবে শুধু মৌখিক উচ্চারণ নয়, তাকে দুহাত বাড়িয়ে ঘরের মেয়ে বলে গ্রহণ করে নেন 'তাতুষ' ও তাঁর পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব৷ এই প্রথম একটি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পান বেবী৷ দিন যায়৷ রাত পোহায়৷ একদিন বই মুছতে মুছতেই তুলে নেন তসলিমা নাসরিনের 'আমার মেয়েবেলা'৷ তাতুষ অর্থাত্‌ প্রবোধকুমার এনে দেন খাতা-কলম৷ বলেন, রোজ একপাতা করে লিখবে৷ ঠিক যেভাবে মনে আছে৷

আর সেই থেকেই শুরু৷ কাজ করতে করতে অবসরে, অছিলায় এক সময় লেখা হয়ে যায় বেবীর প্রথম উপন্যাস 'আলো আঁধারি'৷ কাজের মেয়ে হয়ে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই, ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখানো - বাংলা সাহিত্যে এ ধরনের লেখা বহু আছে৷ কিন্তু, এতো প্রান্তিক নারীর নিজের লেখা৷ নিজের হাতে, নিজের কলমে লেখা নিজ কাহিনী৷ এর জন্যই তো 'আলো আঁধারি'-র এমন ভীষণ আকর্ষণ৷

বেবী লেখেন : ''...বেবী নিজের শৈশবকে চাটে, যেমন নবজাত বাছুরকে ওর মা চাটে''৷ অথবা ''বুকের হাড়গুলো সব কাঁপছে৷ শরীর তখন জল হয়ে গিয়েছে...''৷ এমনই নি:সঙ্কোচ বেবীর ভাষা৷ সহজ, সরল বাক্য বন্ধন৷ তাই লেখার ভাষা ও সামগ্রিক এডিটিং নিয়ে সমস্যা থাকলেও, 'আলো আঁধারি' হয়ে ওঠে অন্যতর, ভিন্নমানের একটি উপন্যাস৷

'আলো আঁধারি'-র ভূমিকায় বাংলার অন্যতম কবি শঙ্খ ঘোষ লিখছেন, "তার লেখা কেন কারো ভালো লাগতে পারে, সেকথা বুঝবার ক্ষমতা তার না থাকাই সম্ভব, না থাকাই ভালো৷ কিন্তু তার স্বছ সহজ দৃষ্টি দিয়ে চারপাশের জীবনকে সে কতো যে ভালো বুঝতে পারে, বিচার করতে পারে, আর সাহস নিয়ে তার মুখোমুখী দাঁড়াতে পারে, বিস্ময়কর এই বইটির পাতায় পাতায় তার চিহ্ন আছে ছড়ানো৷"