কে-পপ, অ্যানিমে ও কসপ্লে: রাশিয়ায় যুদ্ধের ‘উপহার’
এক সময় অনেকে জানতে চাইতেন, ‘‘কে-পপ কী জিনিস?’’ অ্যানিমে বা কসপ্লেও চিনতেন না অনেক তরুণ-তরুণী৷ ‘ইউক্রেন যুদ্ধ’ শুরুর পর সেই রাশিয়ায় কে-পপ, অ্যানিমে আর কসপ্লে কিভাবে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেলো জেনে নিন তার পেছনের গল্প...
কারিনা মারাকশিনার বিস্ময়
এক বছর আগেও নিজের ড্যান্স স্টুডিয়োয় এসে অনেকে জানতে চাইতেন, ‘‘কে-পপ আসলে কী জিনিস?’’ মাত্র এক বছরে আমূল বদলে গেছে পরিস্থিতি৷ তার জেএসএস স্টুডিয়োর প্রচার, প্রসার তো বেড়েছেই, এমন অনেক স্টুডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে৷ কারিনা আজকাল অনেক শপিং মলে গিয়ে অবাক হয়ে যান এই ভেবে, ‘‘আরে, এখানেও কে-পপ বাজছে!’’
রাশিয়ায় কে-পপ, কসপ্লে ও অ্যানিমের জয়জয়কার
শুধু কে-পপ কেন, খুব অল্প সময়ে অ্যানিমে এবং কসমোপ্লে-ও লুফে নিয়েছে রাশিয়ার তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ৷গত নভেম্বরে মস্কোয় আয়োজিত হলো কসমোপ্লে-র দুর্দান্ত এক উৎসব৷ এক হাজারেরও বেশি কসপ্লেয়ার বেগুনি পরচুলা আর ঐতিহ্যবাহী কিমোনো পরে নানা জনপ্রিয় চরিত্র হয়ে এসে মাতিয়ে রেখেছেন পুরো আসর৷
নেপথ্যের কারণ
রাশিয়ায় কে-পপ, অ্যানিমে এবং কসপ্লে-র জোয়াড় শুরুর প্রধান কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ৷ ইউক্রেনে হামলা করায় রাশিয়ার ওপর নেমে আসে পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা৷বন্ধ হয়ে যায় বিদেশি পণ্য আমদানি, রুশ নাগরিগদের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায় পশ্চিমা দেশগুলোর দরজা৷ ফলে রাশিয়ায় বিনোদনের জগতও হয়ে যায় সংকুচিত৷ পাশ্চাত্যের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার ওই সময়েই রাশিয়ার তরুণ সমাজ ঝুঁকে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং চীনের সাংস্কৃতিক পণ্যের দিকে৷
এশিয়ায় মজেছে রাশিয়া
কারিনা মারাকশিনা তার জিএসএস স্টুডিয়ো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ২০১৬ সালে৷ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দ্রুত শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে জিএসএস৷ কারিনা মনে করেন এর প্রধান কারণ রাশিয়ার কিশোর এবং তরুণদের এশিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়া, ‘‘আজকাল তো আমি যেই টিনএজারের সঙ্গেই কথা বলি, দেখি সে-ই এশিয়ায় বুঁদ হয়ে আছে৷’’ তিনি জানান, কসমোপ্লে আর অ্যানিমে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা পেলেও রাশিয়ায় কে-পপের জনপ্রিয়তাই বেশি৷
একতার অনুভূতি
জিএসএস স্টুডিয়োর কোরিওগ্রাফার পলিনা ইভানভস্কায়া৷ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘‘কে-পপের কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে?’’ জবাবে পলিনা বললেন, ‘‘একসঙ্গে কাজ করার অনুভূতি৷ আমরা যে সবসময় একটা গ্রুপ হিসেবে নাচি- এই বিষয়টাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে৷ এই নাচটা একটা গ্রুপে এক হয়ে যাওয়ার একটা অনুভূতি দেয় আমাদের৷’’